ফরজ নামাজের পর নবীজির আমল সমূহ জেনে নিন
নামাজ মুমিনের জীবনে সবচেয়ে বড় ইবাদত। এটা শুধু দায়িত্ব নয়—প্রভুর সাথে হৃদয়ের একান্ত সংযোগ।
নামাজ শেষে যদি কিছু বিশেষ আমল করা যায়, তাহলে মনে আসে গভীর প্রশান্তি।
প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজের পর কিছু গুরুত্বপূর্ণ দোয়া ও আমল করতেন, যা আমাদের জন্য দিকনির্দেশনা।
আপনি কি জানেন—ফরজ নামাজের পর নবীজির নিয়মিত আমল কী ছিল? আর আমরা কী কী আমল করতে পারি?
চলুন, জেনে নিই সেই সুন্দর কিছু মাসনূন আমল ও দোয়া—
যা আপনার প্রতিদিনের নামাজকে আরও অর্থবহ করে তুলবে। ইনশাআল্লাহ
নবী (সাঃ) ইরশাদ ফরমানঃ-
প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর কিছু দোয়া (আমল) রয়েছে, যে কেউ দোয়াগুলো পরে এবং কাজে লাগায় সে কখনোই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
(মুসলিম শরীফ ১২৩৭)

ফরজ নামাজের পর নবীজির আমল সমূহ
দোজাহানের বাদশা, রহমতে আলম নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর পড়তেন কিছু বিশেষ দোয়া—সংখ্যায় ১৩টি।
এই দোয়াগুলো যেমন ছোট, তেমনি সহজ ও অর্থবহ। প্রতিটি দোয়া আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছানোর এক একটি সেতুবন্ধ।
তাই আমাদের উচিত আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় নবীজির তরিকা অনুযায়ী ফরজ নামাজ আদায় করে দোয়াগুলো পাঠ করা।
নিচে টেবিল আকারে দেওয়া হলো সেই মূল্যবান দোয়াগুলো — আরবি ও বাংলা অনুবাদসহ, যেন সহজেই মুখস্থ ও আমলে আনা যায়।
ক্রমিক | আরবি | বাংলা উচ্চারণ | বার |
---|---|---|---|
০১ | “أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ | আস্তাগফিরুল্লাহ। | ৩বার |
০২ | ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺃَﻧْﺖَ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ، ﻭَﻣِﻨْﻚَ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ، ﺗَﺒَﺎﺭَﻛْﺖَ ﻳَﺎ ﺫَﺍ ﺍﻟْﺠَﻼَﻝِ ﻭَﺍﻟْﺈِﻛْﺮَﺍﻡِ | আল্লাহুম্মান্তাসসালাম – অমিঙ্কাস সালাম- তাবারাক্তা ইয়া জালজালালী ওয়াল ইকরাম। | ১বার |
০৩ | اَللّهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ عِلْماً نَّافِعاً وَّرِزْقاً طَيِّباً وَّعَمَلاً مُّتَقَبَّلاً | আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইলমান নাফিয়া ওয়া রিজকান তায়্যিবা ওয়া মালাম মুতাকব্বালা। | ১বার |
০৪ | «لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِي وَيُمِيتُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ» | লাইলাহা ইল্লাল্লাহু অহদাহু লা-শারিকালাহু, লাহুল মুল্কু অলাহুল হামদু য়ুহয়ি অয়ুমিতু অহুয়ালাকুল্লি সাইয়িন কদির। | ১০বার |
০৫ | اَللّهُمَّ قِنِيْ عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ عِبَادَكَ | আল্লাহুম্মা কিনি আজাবাকা ইয়াউমা তাবআছু ইবাদাক। | ১বার |
০৬ | ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺃَﻋِﻨِّﻲ ﻋَﻠَﻰ ﺫِﻛْﺮِﻙَ، ﻭَﺷُﻜْﺮِﻙَ، ﻭَﺣُﺴْﻦِ ﻋِﺒﺎﺩَﺗِﻚَ | আল্লাহুম্মা আয়িন্নি আলা জিকরিকা,অ শুকরিকা,অ হুসনি ইবাদিক। | ১বার |
০৭ | سوره الاخلاص سوره الفلق سوره الناس | সূরা আল-ইখলাস, সূরা আল-ফালাক, সূরা আল-নাস। | ১বার |
০৮ | سبحان الله(٣٣) الحمد لله(٣٣) الله اكبر(٣٤) | সুবহানাল্লাহ(৩৩) আলহামদুলিল্লাহ(৩৩) আল্লাহু আকবার(৩৪) | মোট ১০০ |
০৯ | ايه الكرسي | আয়াতুল কুরসি | ১বার |
১০ | لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِالله | লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ | ১বার |
১১ | اَللّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِىَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الَجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ | আল্লাহুম্মা লা-মানিয়া লিমা আয়তাইতা অলা মুয়তিয়া লিমা মানায়তা অলা ইয়ানফায়ু যাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দি। | ১ বার |
১২ | لاَ إِلهَ إِلاَّ الله وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَ هُوَ عَلى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ | লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু অহদাহু লা-শারিকালাহু লাহুল্মুল্কু অলাহুলহামদু অহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কদির। | ১বার |
১৩ | لآ إِلهَ إِلاَّ اللهُ وَلاَ نَعْبُدُ إِلاَّ إِيَّاهُ لَهُ النِّعْمَةُ وَلَهُ الْفَضْلُ وَلَهُ الثَّنَاءُ الْحَسَنُ، لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُوْنَ | লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু অলা নায়বুদু ইল্লাল্লাহু লাহুন নিয়মাতা অলাহুল ফাদলু অলাহুছানায়ু, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুখলিসিনা লাহুদ্দিনা অলাও কারহাল কাফিরুন। | ১বার |
আরোও কিছু দোয়া (আমল)
আরবি | বাংলা উচ্চারণ | বার |
---|---|---|
درود الشريف | দুরুদ শরীফ/ ফজর এবং মাগরিবের পর | ১০ বার |
رضيت بالله ربا وبالاسلام دينا وبمحمد نبيا صلى الله عليه وسلم | রাদিতুবিল্লাহি রব্বাও,ওয়াবিল ইসলামি দ্বীনও,ওয়াবি মোহাম্মদননাবিয়ান সাঃ। ফজর এবং মাগরিবের পর | ৩বার |
سبحان الله وبحمده | সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি/ফজর এবং মাগরিবের পর | ১০০বার |
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
ফরজ নামাজের পর যে সকল আমলগুলো করা যায়। সুবহানাল্লাহ(৩৩) আলহামদুলিল্লাহ(৩৩) আল্লাহু আকবার(৩৪) এবং আয়াতুল কুরসি ১ বার ।
শেষ কথা
এই লেখার মাধ্যমে আমরা জেনেছি ফরজ নামাজের পর নবীজির আমলসমূহ।
তবে শুধু জানা নয়, মানার মধ্যেই রয়েছে আসল সফলতা।
চেষ্টা করব প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর তাসবীহ ও দোয়াগুলো পড়ার। প্রতি ওয়াক্তে না পারলেও অন্তত ফজর, মাগরিব বা ইশার পর সময় বের করে আমল আমল গুলো করার।
আর সময় কম থাকলে ছোট ছোট তাসবীহগুলো অন্তত যেন আদায় হয়।
আল্লাহ তাওফিক দান করুন, আমিন!