এশার নামাজ কয় রাকাত – জানুন দলিল সহ
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে নামাজ দ্বিতীয় স্তরে। নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক পুরুষ/ মহিলা – বালেগ /বালিগার জন্য একান্তই জরুরী (ফরজ)। এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে অতীব গুরুত্বপূর্ণ নামাজ সালাতুল ইশা, যার ওয়াক্ত সবার শেষ হয়ে থাকে। এবং এটিই দিনের শেষ নামাজ।
তাই আজ আপনাদেরকে এশার নামাজ সম্পর্কিত কিছু কমন প্রশ্নের উত্তর দিতে চলেছি যেমনঃ- এশার নামাজ কয় রাকাত এবং কয় রাকাত পড়তে হয়? ইত্যাদি ইত্যাদ। এছাড়া অন্য আরেকটি পোস্টে এশার নামাজের নিয়ম, নিয়ত, গুরুত্ব ও আদায় পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।
এশার নামাজ কয় রাকাত
এশা নামাজ ইসলামের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে একটি। এটি রাতের মধ্যভাগে এবং ঘুমের পূর্বে পড়া হয়। প্রচলিত এশার নামাজের রাকাত সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন মত পাওয়া যায় যেমনঃ- এশার নামাজ ১৭ রাকাত, ১৫/ ৯ রাকাত ও আরো কত কি। তারই প্রেক্ষাপটের সঠিক উত্তর দলিল সহ নিয়ে হাজির হলাম আমরা।
নিম্নে এশার নামাজ কত রাকাত এবং কি কি তা বিস্তারিত উল্লেখ করা হলোঃ-
ইশার মূল নামাজ ৯ রাকাতঃ-
- ৪ রাকাত ফরজ।
- ২ রাকাত সুন্নত।
- ৩ রাকাত ওয়াজিব (বিতর)।
৪+২+৩=৯
প্রচলিত এশার নামাজের রাকাত সংখ্যা ৯/১৫এবং১৭ রাকাত সবগুলোই সহি। এর মধ্যে বাধ্যতামূলক ৯ রাকাত যা অনিবার্য। আর বাকি সুন্নত এবং নাফলগুলো অপশনাল।
এশার নামাজ ১৫ গণনা করা হয় যেভাবে।
- ৪ রাকাত সুন্নত (অপশনাল)
- ৪ রাকাত ফরয
- ২ রাকাত সুন্নত
- ২ রাকাত নফল (অপশনাল)
- ৩ রাকাত ওয়াজিব (বিতর)
৪+৪+২+২+৩=১৫
এশার নামাজ ১৭ রাকাত গণনা করা হয় যেভাবে।
কেউ কেউ সব শেষে সালাতুল বিতরের পরেও ২’রাকাত নফল বলেছেন।
তো ১৫+২= মোট ১৭ রাকাত।
বিঃদ্রঃ- তাই বলে সবসময় শুধুমাত্র ৯ রাকাত আদায় করব বিষয়টি যেন এমন না হয়। সময় হলে সুন্নতে জায়েদা এবং নাওয়াফেল গুলোও আদায় করা চাই। কেননা হাদিস এবং বড়দের থেকে এশার আগে এবং পরের সুন্নত গুলোর গুরুত্ব কেমন তা আমাদের কাছে সুস্পষ্ট। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দিক আমিন।
এশার রাকাত সংখ্যা সম্পর্কিত হাদিস ও দলিল
হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ- যে কেউ এশার আগে চার রাকাত নামাজ পড়ে নিল পক্ষান্তরে সে যেন তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করে নিল। আর যে কেউ এশার পরে চার রাকাত নামাজ পড়ে নিল সে যেন শবে কদরের চার রাকাত আদায় করে নিল।
এটি ইমাম বায়হাকি রহঃ এর বর্ণনা এবং দারাকুতনী ও নাসায়ী শরীফে কা’ব (রা.) এর থেকে বর্ণিত হয়ে এসেছে। (আদ-দিরায়াহ: ১/১৫১)
সাহাবায়ে কেরাম ইশার আগে চার রাকাআত নামায পড়া পছন্দ করতেন।
এটি হযরত সায়ীদ ইবনে জুবায়ের (রহ.) থেকে।
রাসূল (সাঃ) এর এশার নামাজ সম্পর্কে হযরত আয়েশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) এশার নামাজ মসজিদে আদায় করে ঘরে আসতেন এবং চার রাকাত আদায় করে বিছানায় যেতেন।
(সুনানে আবু দাউদ: ১/১৯১)
রাসূল (সাঃ) ৩ রাকাত বিতর নামাজ আদায় করতেন এবং প্রতি রাকাতে ৩ টি করে সূরা ৩ রাকাত এ সর্বমোট ৯টি সূরা পড়তেন এবং সর্বশেষ যে সূরাটি পড়তেন সেটি হল -সূরাতুল ইখলাস-
হযরত আলী (রা.) থেকে-(জামে তিরমিযী: ১/১০৬)
হযরত আয়েশা (রাঃ) কে আবু সালামা, নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে. তিনি বলেন রাসূল (সাঃ) এশার নামাজ ১৩ রাকাত পড়তেন/৮ পড়তেন। অতঃপর বিতর আদায় করতেন ও পরে ২ রাকাত নামাজ আদায় করতেন বসে বসে।
উপরোক্ত হাদিসের বর্ণনা অনুসারে ৪ টি রেওয়ায়েত সুস্পষ্ট।
- এশার আগে ৪ রাকাত নামাজ আদায় করা। সাহাবীগণ এই ৪ রাকাত মুস্তাহাব মনে করতেন।
- এশার পরে ৪ রাকাত নামাজ আদায় করা। অর্থাৎ ২ রাকাত সুন্নত ও দুই রাকাত নফল।
- এশারের সময় রাসুল ৩ রাকাত বিতর পড়তেন।
- বিতরের পর আরোও ২ রাকাত বসে বসে পড়তেন।
সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
এশার নামাজ কয় রাকাত সুন্নত কয় রাকাত ফরজ?
এশার নামাজের ফরজ ৪ রাকাত। সুন্নত ২ রাকাত যা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। আর উপরোক্ত হাদিস অনুযায়ী সাহাবায়ে কেরাম ফরজের পূর্বে চার রাকাত সুন্নত পড়া মুস্তাহাব মনে করতেন।
এশার নামাজ কয় রাকাত কি কি?
ইশার ৯ রাকাতঃ- ৪ রাকাত ফরজ। ২ রাকাত সুন্নত। ৩ রাকাত ওয়াজিব (বিতর)। পারলে ১৫ এবং ১৭ রাকাত পড়া উত্তম।
এশার নামাজ কয় রাকাত পড়তে হয়?
এশার নামাজ কয় রাকাত পড়া যায় এ বিষয়টি আমরা অনেকেই জানতে চাই, এশার অত্যাবশ্যক নামাজ ৯ রাকাত।